দীর্ঘ ৩৯ বছরের বর্ণাঢ্য শিক্ষকতা জীবনের পর অবসরে গেলেন কুলাউড়ার আমীর ছলফু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুলতানা রহমান। ১৯৮৬ সালে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে যাত্রা শুরু করা এই গুণী শিক্ষকের বিদায়ী সংবর্ধনায় সহকর্মী, বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ।
রবিবার (২৯ জুন) বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত বিদায় অনুষ্ঠানে সকাল থেকেই স্কুল প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীদের পদচারণায়। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চোখে-মুখে ছিল প্রিয়জনকে বিদায় জানানোর বেদনা আর কৃতজ্ঞতা। সংবর্ধনা শেষে প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও সহকর্মীরা ফুলেল সজ্জিত গাড়িতে তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেন শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইফতেখায়ের হোসেন ভূঁইয়া।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ মো. শফিকুর রহমান সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রাজিব মিয়া, সংবর্ধিত শিক্ষকের স্বামী ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. লুৎফুর রহমান, রাবেয়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস ছালাম এবং সাংবাদিক মাহফুজ শাকিল।
আরও বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুমি চক্রবর্তী, প্রাক্তন শিক্ষার্থী সুজন আহমদ, লিংকন তালুকদার এবং মানপত্র পাঠ করেন প্রাক্তন শিক্ষার্থী তাইয়্যিবা সিদ্দিকা প্রেমি।
বক্তারা বলেন, সুলতানা রহমান শুধু একজন শিক্ষকই ছিলেন না, ছিলেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকতুল্য একজন মহৎ মানুষ। তাঁর সততা, দায়িত্ববোধ ও বিদ্যালয়ের প্রতি ভালোবাসা আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়। বিদ্যালয়টির গোড়াপত্তন থেকে অবকাঠামোগত ও মানোন্নয়নে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।
বিদায়ী বক্তব্যে শিক্ষক সুলতানা রহমান বলেন, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে ৫৯ বছর পূর্ণ করে শিক্ষকতা জীবন শেষ করছি। বিদায় মুহূর্তে তোমাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আমাকে চিরদিনের জন্য ঋণী করে রাখলো। আমি যতদিন বাঁচি, ততদিন তোমাদের খোঁজ রাখবো। একজন মানবিক মানুষ হয়ে গড়ে উঠো, সেটাই আমার প্রত্যাশা।
অনুষ্ঠানে তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা, সম্মাননা স্মারক ও নানা উপহারসামগ্রী প্রদান করা হয়। শিক্ষক সুলতানা রহমান উপজেলার সদর ইউনিয়নের করেরগ্রামের বাসিন্দা।
সুত্র, সময় কুলাউড়া।